Recents in Beach

জরুরি আমল যা রাতে প্রত্যেক মুসলমানের করা উচিত - Islamic Stories

জরুরি আমল যা রাতে প্রত্যেক মুসলমানের করা উচিত

জরুরি আমল যা রাতে প্রত্যেক মুসলমানের করা উচিত - Islamic Stories
জরুরি-আমল - Islamic Stories

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম যদি দুইটি কাজ প্রত্যহ করতে পারে তাহলে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কাজ দুটি খুবই সহজ তবুও করার মানুষ খুব কম। 
প্রথমত, প্রত্যেক সালাতের পরে ১০ বার ‘সুবহানাল্লাহ’, ১০ বার ‘আল-হামদুলিল্লাহ ‘ এবং ১০ বার ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে। এতে ১৫০ বার জিহ্বার জিকর হবে ও আল্লাহর কাছে আমলনামায় বা মিজানে ১৫০০ সাওয়াব হবে।

দ্বিতীয়ত, বিছানায় শয়ন করার পরে ৩৪ বার ‘আল্লাহু আকবার’, ৩৩ বার ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ এবং ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ’ বলবে। এতে মুখে ১০০ বার এবং মিজানে ১ হাজার বার হবে। রাসুল (সা.) আঙুলে গুনে গুনে তা দেখান। সাহাবিরা প্রশ্ন করেন, ‘এই দুটি কর্ম  হওয়া সত্ত্বেও পালনকারী ছাড় কেন?’ উনি উত্তরে বলেন, ‘কেউ শুয়ে পড়লে শয়তান এসে এগুলো বলার পূর্বেই নিদ্রা পাড়িয়ে দেয়। সালাতের পরে এগুলো বলার পূর্বেই তাকে তার বিভিন্ন কথা মনে করিয়ে দেয়।’ (আবু দাউদ, ইবনে হিব্বান, তারগিব)।

আয়াতুল কুরসি বোখারি বর্ণিত হাদিস হতে আমরা জানতে পারি যে, কেউ রাতে বিছানায় শয়ন করার পরে আয়াতুল কুরসি পাঠ করলে সারা রাত আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁকে হেফাজত করা হবে ও কোনো শয়তান তার কাছে আসতে পারবে না।

সূরা বাকারার সমাপ্ত দুই আয়াত : আবু মাসউদ (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি কেউ রাত্রিতে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করে তবে তা তার জন্য অনেক হবে।’ (বোখারি ও মুসলিম)।
সূরা কাফিরুন : নাওফাল আল-আশজায়ী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছেন, তুমি সূরা ‘কাফিরুন’ পড়ে ঘুমাবে, এই শিরক থেকে তোমার বিমুক্তি।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ)।

সূরা এখলাস : আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) তাঁর সাহাবিদের বললেন, ‘তোমরা কি পারবে না রাত্রিতে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তেলাওয়াত করতে? বিষয়টি তাদের নিকট উদ্বেজক মনে হলো। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের মধ্যে কে-ই বা তা পারবে? তখন তিনি বলেন, গোত্র হুআল্লাহু আহাদ সূরাটি কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ।’ আবু দারদা (রা.) হতে সেইম অর্থে অন্য কোনো হাদিস কথিত হয়েছে। (বোখারি এবং মুসলিম)।
সূরা এখলাস, ফালাক এবং নাস  (তিনবার) : দুই হাত একত্র করে এই সূরাগুলো পাঠ করে হাতে ফুঁ দিয়ে হাত দুইটা যথাসম্ভব শরীরের সবখানে বুলানো- এভাবে তিনবার করতে হবে। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি রাত্রিতে বিছানায় গমনের পরে তাঁর মোবারক দুটি হাত একত্রিত করে তাতে ফুঁ দিতেন এবং তাতে উপরের তিনটি সূরা পাঠ করতেন। তারপর দেহের যতটুকু স্থান সম্ভব দুই হাত দিয়ে মাসেহ করতেন। মাথা, মুখ এবং দেহের সামনের দিক হতে শুরু করতেন। এভাবে তিনবার করতেন।’ (বোখারি)।

অজু অবস্থায় ঘুমাতে যাওয়া : ঘুমের জন্য অজু অবস্থায় শয়ন করা ১টি ইম্পোর্টেন্ট মাসনুন ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাই বিশেষভাবে আগ্রহ প্রদান করেছেন এবং এ জন্য বিশেষ দুইটা পুরস্কারের গুড নিউজ প্রদান করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের দেহগুলোকে পবিত্র রাখবে, স্রষ্টা তোমাদের পবিত্র করুন। যদি কোনো বান্দা অজু অবস্থয় ঘুমান, তবে তার পোশাকের ভিতরে একজন ফেরেশতা শুয়ে থাকেন। রাতে যখনই এই মানুষ নড়াচড়া করে তখনই এই ফেরেশতা বলেন, ‘হে আল্লাহ আপনি এই ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দিন, রিজন সে অজু অবস্থায় ঘুমিয়েছে।’ (ইবনে হিব্বান, তাবারানি, সহিহুত তারগিব)।

অন্য হাদিসে মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে কোনো মুসলিম যদি অজু অবস্থায় (আল্লাহর জিকরের ওপর) ঘুমায়, তারপর রাতেরবেলা কোনো সময় হঠাৎ তার নিদ্রা ভেঙে যায় ও সে (ওই অবস্থায় শুয়ে শুয়ে) আল্লাহর নিকট তার জাগতিক বা পারলৌকিক কোনো মঙ্গল কামনা করে কিন্তু স্রষ্টা তাকে তার পার্থিত বস্তু দেবেনই।’ (আবু দাউদ, সহিহ তারগিব, নাসাঈ)। ঘুমের প্রথমে অজু করে পসিবল হলে ২/৪ রাকাত সালাত আদায় করে ঘুমাবেন। বিশেষত যারা সমাপ্ত রাত্রিতে তাহাজ্জুদের জন্য উঠতে পারবেন না বলে ভয় পাবেন, তারা ঘুমানোর আগে ২/৪ রাকাত ‘কিয়ামুল্লাইল’ আদায় করে ঘুমাবেন।
ভালো লাগলে সবার সাথে শেয়ার করুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ