হেদায়াত লাভের গল্প জানলে বদলে যেতে পারে আপনার জীবন
![]() |
হেদায়াত-লাভের-গল্প | Islamic Stories (ইসলামিক গল্প) |
একটু টাইম নিয়ে পড়ুন। বদলে যেতে পারে আপনার জীবন, ইনশাআল্লাহ। এক দেশের ইমাম সাহেবের কথা।
ইমাম সাহেবের দশ সালের ছোট একটা ছেলে আছে।প্রতি শুক্রবার ইমাম সাহেব জুম্মার নামাজ সমাপ্ত করে ছেলেকে নিয়ে দাওয়াতের কাজে বের হতো।রাস্তায় যাকে পেত তাকেই ইসলামিক বই,ম্যাগাজিন প্রভৃতি ধরিয়ে দিতো।
শীতের সময়।প্রচুর শীতে তুষার পরছে।তাই ইমাম সাহেব নির্ভুল করে রেখেছেন আজ আর তারা বের হবেনা।এই দিকে ছোট ছেলেটা উত্তাপ কাপড় পরে প্রস্তুত হয়ে এসে বলছে, "বাবা আমি রেডি।"
ইমাম সাহেব বললো, "কেন?"
ছেলেটা বললো, "কেন, তোমার মনে নেই! আজ আমরা দাওয়াতের কাজে বের হবো?"
ইমাম সাহেব বললো, "আজ যাবোনা,দেখছোনা বাহিরে পড়ছে?"
বাবার কথা শুনে ছেলেটা বিস্মিত হয়ে বললো, "তুষার পরছে বলা হয় কি মানুষের জন্য জাহান্নামে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে?"
ছেলের এইরকম গভীর প্রশ্ন শুনে পিতা বললো, "আমি আজ যাবো না।"
ছেলে বললো, "ঠিক আছে, তাহলে আমি যাই।" বাপ বললো যাও।
ছেলেটি বই নিয়ে বের হয়ে গেল।দুই ঘন্টা যাবত বিলি করছে, এর মধ্যে শীতে ছেলেটির হাত চরণ যেন জমে গেছে।শেষে আর একটা বই অবশিষ্ট আছে অথচ কাউকে পাচ্ছেনা। এদিক সেদিক খুঁজে ছেলেটি বাড়ি ফেরার পথ ধরলো।ঠিক তখনি দেখলো একটা বাড়ি।ছেলেটি ভাবলো হয়তো বাড়িতে কেউ রয়েছে এজন্য সে দরজায় গিয়ে কলিং বেল বাজাতে আরম্ভ করলো।এক,দুই, তিন বার কলিং বেল বাজালো তবুও ভেতর থেকে কোন সারা নেই।তারপর ছেলেটি চলে যেতে সম্মুখে চরণ বাড়ালো।হঠাৎ কোন এক অজানা শক্তি যেন তাকে আবার দরজার সম্মুখে টেনে নিয়ে গেল।ছেলেটি এবার দরজায় ঠকঠক করতে লাগলো।কিন্তু না এবারও কোন সারা নেই।কিছুক্ষন অপেক্ষা করে আবার দরজায় ঠকঠক করলো।তারপর অকস্মাৎ ভেতর থেকে ধীরে করে একজন মধ্য বয়সের মহিলা দরজাটা খুললো।মহিলাকে দেখে ছেলেটি একটা খুশি দিল যেন তার সব দুঃখ শেষ হয়ে গেছে।
এবার মানবীর হাতে বইটি দিয়ে বললো,"আন্টি আপনাকে বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত। প্রকৃতপক্ষে আমি বলতে এসে ছিলাম যে- {পৃথিবীতে আর কেউ আপনাকে ভালোবাসুক বা না বাসুক, একজন আপনাকে পর্যাপ্ত ভালোবাসে, কেউ আপনার কেয়ার করুক বা না করুক, একজন আপনার খুব কেয়ার করে,আপনার খোঁজ রাখে। তিনি হলেন আামাদের রব। আল্লাহ।}
এ বইটি পড়ে আপনি আপনার আল্লাহ সম্মন্ধে জানতে পারবেন।"
এই বলা হয়ে থাকে ছেলেটি চলে গেল।
মহিলাটি কিছুই বললনা।
তারপরের শুক্রবারে যথাক্রমে ইমাম সাহেব খুতবা সমাপ্ত করে বললেন, কারো কিছু বলার আছে?
মহিলাদের সাইড থেকে একজন মহিলা দাড়িয়ে বললো,
"আমার কিছু বলার আছে।"
তারপর মহিলাটি বললো, "এখানকার কেউ আমাকে চেনেনা। কারণ, আমি আজই এইখানে নামাজ পড়তে এসেছি। এর পূর্বের শুক্রবার পর্যন্তও আমি ছিলাম অমুসলিম।আমার স্বামী মারা গেছে। অতঃপর হতে কেউ আমার কোন খোঁজ নেয়না। আমার বাবা-মা কেউ আমাকে দেখতে আসে না।আমার বার্তা নেয় না। নিজেকে প্রচুর কেবল আর একা মনে হচ্ছিলো। ভাবলাম আমার তো কেউ নাই আমি আর বেঁচে হতে কি করবো।তাই ডিসিশন নিলাম আমি আত্মহত্যা করবো। সকল কতিপয় রেডি করে ফেলেছি। ফ্যানের মধ্যে দড়ি ঝুলছে আর আমি চেয়ারে দাঁড়িয়েছি বিদায় নেওয়ার জন্য। একদম সমাপ্ত মোমেন্টে আমি গলায় দড়ি দিব, ঠিক তখনই কে যেন বারবার আমার দরজায় ঠকঠক করছে, কলিং বেল বাজাচ্ছে।একবার ভাবলাম খুলবোনা। তা সত্ত্বেও বারবারই দরজায় ঠকঠক করছে। কিছুক্ষন ভেবে গেলাম দরজা খুলতে। খুলে দেখি ফুটফুটে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে রয়েছে হাতে একটা বই নিয়ে। আমাকে দেখে খুশি কর্তৃক বললো,
"আন্টি পৃথিবীতে আপনাকে কেউ ভালোবাসুক আর না বাসুক একজন আপনাকে অনেক ভালোবাসে। আর তিনি আমাদের রব, আল্লাহ।"
তারপর দরজা অফ করে কামরায় ঢুকলাম। তখনও আমার দড়ি ঝুলছে। ভাবলাম আগে বইটা পড়ি।বইটা খুলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দ্বারা পড়লাম। পড়া শেষে আমি আমার আসল ঠিকানা খুঁজে পেলাম। এক লাথি দ্বারা চেয়ার আর দড়ি ফেলে দিলাম। পেয়ে গেলাম আমার আপনজন।আমার বাঁচার পথ। পেয়ে গেলাম আমার স্রষ্টা আল্লাহকে! সাথে সঙ্গে কালেমা পড়ে মুসলমান হয়ে গেলাম।
আলহামদুলিল্লাহ।
ছেলেটি আমাকে জাহান্নাম হতে বাঁচার রাস্তা দেখিয়ে দিলো।যা ছিল আল্লাহর ইচ্ছা। আমি বইটার মধ্যে এই মসজিদের ঠিকানা পেয়েছি। আর এজন্য এসেছি যে, আমি ছেলেটার ভাগ্যে একটা চুমু দিব।"
মহিলার কথা শুনে সবাই কাঁদা আরম্ভ করলো। ইমাম সাহেবের চক্ষু বেয়ে অঝোরে জল পরছে। কোলে বসে আছে ছোট সেই ছেলেটি। ইমাম সাহেবের বুক যেন গর্বে ভরে গেল। এমন পোলা প্রভু তাকে উৎসর্গ করেছেন।
একটু ভাবুন এই ছেলেটা কি ভেবেছে যে ইদানিং আমি ছোট, বৃহৎ হয়ে এসব কাজ করবো?
আর আমরা!
যখন ১০ বছর, খুঁজি খেলার মাঠ।
যখন ২০বছর, lIfe is enjoy. জীবন তো একটাই, এজন্য Enjoy করি।
যখন ৩০ বছর, টাকা পয়সা করবো কিভাবে??
যখন ৪০বছর, খুঁজি একটু অবসর।
যখন ৫০/৬০ বছর, সেই সময় দৌঁড়াই মসজিদে!
জানেন কি আপনি?
১দিনের একটা শিশুও মারা যায়!
তাহলে কি করে এটি ভাবেন যে, বৃদ্ধ হয়ে খোদাকে ডাকবো!
এখনো সময় আছে, ফিরে আসুন আল্লাহর কাছে। নামাজ পড়ুন। এখনি দৌঁড়ান মসজিদে।
বোনেরা, আপনি নামাজ পড়ুন ঘরে। আপনার হতে আপনার সন্তান শিখবে।
প্রতিজ্ঞা করুন আজ হতে আর নামাজ বাতিল দিবোনা। ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত সম্প্রদান করুন। @@আমিন।
(জান্নাত প্রত্যাশী)
0 মন্তব্যসমূহ