Recents in Beach

জিন ও শয়তানের পার্থক্য - Islamic Stories(ইসলামী গল্প)

জিন ও শয়তানের পার্থক্য
জিন ও শয়তানের পার্থক্য - Islamic Stories(ইসলামী গল্প)
জিন-ও-শয়তানের-পার্থক্য-ইসলামিক-গল্প

কুরআন অনুযায়ী জিন জাতি মানুষের ন্যায় আল্লাহ্ তায়ালার এক সৃষ্ট জাতি যারা পৃথিবীতে মানব আগমনের আগ থেকেই ছিল এবং এখনো তাদের অস্তিত্ব রয়েছে। তবে মানুষের চোখে তাদের দেখা যায় না। তবে জিনরা মানুষকে দেখতে পায়। তারা বিশেষ কিছু শক্তির অধিকারী। তাদের মাঝেও মুসলিম এবং কাফির রয়েছে। তারা মসজিদে নামাজ পড়তে আসে। তাদেরও সমাজ রয়েছে। তাদের আয়ূ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি। উদাহরনস্বরূপ, তারা ৩০০ বছর বয়সে প্রাপ্তবয়স্ক হয়। ঈমাম ইবনে তাইমিয়ার মতে জিন জাতি তাদের অবয়ব পরিবর্তন করতে পারে।
ইসলামের মতে জিন জাতি এক বিশেষ সৃষ্টি। কুরআনের ৭২তম সুরা আল জ্বিন এ শুধু জিনদের নিয়ে কথা বলা হয়েছে। এছাড়া সূরা আন নাস এর শেষ অংশে জিন জাতির উল্লেখ আছে। কুরআনে বলা হয়েছে, হযরত মুহাম্মদ (সা:)কে জিন এবং মানবজাতির নবী হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে। হযরত সুলায়মান (আ:) এর সেনাদলে জিনদের অংশগ্রহণ ছিল বলে কুরআনে উল্লেখ আছে। ইসলামে আরো বলা আছে “ইবলিশ” তথা শয়তান প্রকৃতপক্ষে জিন জাতির একজন ছিল।

      READ MORE:  জেনে নিন জিন জাতির ইতিহাস - ইসলামিক গল্প

ইসলামের মতে, শয়তান হচ্ছে দুষ্ট জিনদের নেতা। ইবলিশ বা শয়তান ছিল প্রথম জিন যে আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ করেছিল। কুরআনে উল্লেখ আছে, ইবলিশ এক সময় আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দা ছিল । কিন্তু আল্লাহ যখন হযরত আদম (আ.) কে সৃষ্টি করলেন, তখন হিংসা ও অহংকারের বশবর্তী হয়ে ইবলিশ আল্লাহর হুকুম অমান্য করে। এ কারণে ইবলিশকে বেহেশত থেকে বিতাড়িত করা হয় এবং এরপর থেকে তার নামকরণ হয় শয়তান।

আরব্য রজনীর কাহিনীর মতো সবসময় জিন অসাধ্য সাধন করতে পারে না। কেননা ঝড়-বাদলের দিনে জিনরা চলতে পারে না। কারণ তারা আগুনের তৈরি বিধায় বৃষ্টির সময় আয়োনাজাইশেন ও বজ্রপাতের তীব্র আলোক ছটায় তাদের ক্ষতি হয়ে থাকে এবং কোন ঘরে যদি নির্দিষ্ট কিছু দোয়া-কালাম ও কাঁচা লেবু থাকে, তাহলে ওই ঘরে জিন প্রবেশ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। আর একটি কথা মানুষ মাটি দিয়ে সৃষ্টি হলেও, শেষ পর্যন্ত এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। কারণ মানুষ মূলত মাটি, পানি, বায়ু ও অগ্নির সংমিশ্রণ। আর তাই জিন আগুনের শিখা দিয়ে সৃষ্টি হলেও তাদের দেহে জলীয় পদার্থের সমাবেশ লক্ষণীয়।

শয়তানও জ্বিন জাতিরই অন্তর্ভুক্ত। শয়তান অর্থ, অবাধ্য, অকৃতজ্ঞ। যারা আল্লাহর অবাধ্য, তাদের শয়তান বলা হয়। আল্লাহর অবাধ্য হওয়ার কারণে ইবলিশকে আল্লাহ শয়তান বানিয়ে ফেলেছেন।
তাই পৃথিবীতে শয়তান ১ জনই। তবে আমাদের যারা ধোকা দেয় তারা হল খারাপ জ্বিন। খারাপ জ্বিন মানুষের চেয়ে সংখ্যায় প্রায় ৭০ গুন বেশি। আরেক প্রকার ভাল জ্বিন। তাফসিরবিদদের মতে শয়তান পানির ওপরে সিংহাসনে বসে হুকুম করে। খারাপ জ্বিনরা রাতে গিয়ে তার কাছে প্রশংসা করে যে, আমি এ করেছি, সে করেছি।

কুরআনে যেসব আয়াতে শয়তানের কথা বলা হয়েছে, এটা বিতাড়িত শয়তানের উক্তি নয়। (আত-তাকভীর ২৫)
হে আমার পিতা, শয়তানের এবাদত করো না। নিশ্চয় শয়তান দয়াময়ের অবাধ্য। (সূরা মারইয়াম : ৪৪)
এই কোরআন শয়তানরা অবতীর্ণ করেনি। (সূরা আশ শুয়ারা : ২১০)
নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। (সূরা আল-ইসরা : ২৭)
শয়তান তাদেরকে বশীভূত করে নিয়েছে, অতঃপর আল্লাহর স্মরণ ভুলিয়ে দিয়েছে। তারা শয়তানের দল। সাবধান, শয়তানের দলই ক্ষতিগ্রস্ত। (সূরা আল মু,যাদিলা : ১৯)
আমি আপনাকে বলব কি কার নিকট শয়তানরা অবতরণ করে? (সূরা আশ শুয়ারা : ২২১)
এবং তাকে সংরক্ষিত করেছি প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে। (সূরা আস সফফাত : ৭)
আমি আকাশকে প্রত্যেক বিতাড়িত শয়তান থেকে নিরাপদ করে দিয়েছি। (সূরা আল হিজর : ১৭)
শয়তান তোমাদের অনেক দলকে পথভ্রষ্ট করেছে। তবুও কি তোমরা বুঝনি? (সূরা ইয়াসীন : ৬২)
আমার বান্দাদের বলে দিন, তারা যেন যা উত্তম এমন কথাই বলে। শয়তান তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধায়। নিশ্চয় শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। (সূরা আল ইসরা : ৫৩)

শয়তান যেন তোমাদেরকে নিবৃত্ত না করে। সে তোমাদের প্রকাশ্য শুত্রু। (সূরা আয যুখরুফ : ৬২)
যারা ঈমানদার তারা জেহাদ করে আল্লাহর পথেই। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা লড়াই করে শয়তানের পক্ষে সুতরাং তোমরা জেহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল। (সূরা আন নিসা : ৭৬)
শয়তানরাই মানুষকে সৎপথে বাধা দান করে, আর মানুষ মনে করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে। সূরা আয যুখরুফ : ৩৭)

             READ MORE:  ইবলিসের কাহিনী - ইসলামিক গল্প

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ